জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক পীরকে আটকে রেখে মারধর করে চুল-দাড়ি কেটে সাদা কাগজে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নে ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহত পীর সৈয়দ তানসেন আহম্মেদ ইউসুফ আল জাহাঙ্গীর (২৮) পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়য়ের গন্ধবপুর গ্রামের পাগলিনীর দরবার শরীফের পীর। তিনি ওই এলাকার আব্দুল বারির ছেলে। আহত পীর বর্তমানে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত পীর, পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরের দিন (সোমবার) দুপুর আনুমানিক ১টায় দরবার শরীফের অনুষ্ঠান উপলক্ষে পীর ও একই এলাকার তার এক সহযোগী হেলাল (২৭) মোটরসাইকেল যোগে বাজার করতে আসে আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের জামালগঞ্জ বাজারে।
পথিমধ্যে জামালগঞ্জ রেল স্টেশনের কাছে পূর্ব থেকে অবস্থান করা কয়েকজন তাদের পথরোধ করে মারধর করে চুল দাড়ি কেটে দেয়। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করতে গেলে পীরকে তারা রুকিন্দীপুর ইউপি সদস্য শাহাদাতের ব্যক্তিগত অফিসে আহত অবস্থায় পায়। সেখানে ইউপি সদস্য জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে আহত পীর, তার পিতা সহ আরও এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেয় ও আনুমানিক বিকেল ৫ টায় তাদের ছেড়ে দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ ঘটনায় আহত পীরের বাবা ২ জনের নাম উল্লেখ করে ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত করে আক্কেলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
পীরের বাবা আব্দুল বারি বলেন,’আমার ছেলেকে মারধর করে মাথার চুল দাড়ি কেটে দিয়েছে। আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে সাদা কাগজে সই নিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আহত পীর জানান,‘বাজার যাওয়ার পথে কিছু উগ্রবাদী ছেলে আমাদের হামলা করে মারধর করে। আমার চুল দাড়ি কেটে দেয়। এক মেম্বার তার বাজরের এক অফিসে আটকে রেখে ভয় দেখিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেয়।
মারধরের কারণ জানতে চাললে পীর বলেন, ‘যারা তাদের মারধর করেছে তারা মাদকসেবী ছিল। তারা আমার দরবারে গিয়ে মাদক সেবন করে দরবারের পরিবেশ নষ্ট করত। আমি তাদের নিষেধ করায় তারা আমাকে মারধর করেছে।’
এ বিষয়ে রুকিন্দীপুর ইউপি সদস্য শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এখানে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে আপোষ করা হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার (ভারপ্রাপ্ত) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে মারধরের বিষয়টির সত্যতা মিলেছে। অভিযুক্তদের আটকের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।